| |
               

মূল পাতা বিশেষ প্রতিবেদন পথ খোলা মাত্র তিনটি; কী করবেন শেখ হাসিনা? 


পথ খোলা মাত্র তিনটি; কী করবেন শেখ হাসিনা? 


রহমত নিউজ     23 September, 2024     11:55 AM    


ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে বাধ্য হয়ে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান স্বৈরাচারি শেখ হাসিনা। এখনো পর্যন্ত সেখানেই আছেন তিনি। দেড় মাসের বেশি সময় ধরে ভারতে অবস্থান করলেও তার সম্বন্ধে এখনো কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানায়নি দেশটি। এরই মধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার তার কূটনৈতিক বা অফিশিয়াল পাসপোর্ট বাতিল করেছে এবং এই পাসপোর্টে ভারতে অবস্থানের ৪৫ দিনের মেয়াদও ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।

এমতাবস্থায় শেখ হাসিনাার ভারতে অবস্থানের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই মুহূর্তে শেখ হাসিনাকে নিয়ে ভারতের সামনে কার্যত তিনটি অপশন বা রাস্তা খোলা আছে। প্রথমত রাজনৈতিক আশ্রয়, দ্বিতীয়ত অন্য কোনো দেশে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা এবং তৃতীয়ত বাংলাদেশে রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তনের পথ তৈরি করা।

ঢাকা ও দিল্লির কূটনৈতিক সূত্র বলছে, শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকায় শেখ হাসিনাকে ভারতে রাখার ক্ষেত্রে দেশটির অভ্যন্তরীণ কোনো চাপ নেই। তাছাড়া পদত্যাগের পর ভারতে আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে দেশটির সর্বদলীয় বৈঠকে সব রাজনৈতিক দলও একমত হয়েছিল।

তবে বিশ্লেষকদের মতে, শেখ হাসিনা যখন দেশত্যাগ করেন, তখন তার কূটনৈতিক পাসপোর্ট বহাল ছিল এবং এটির সুবাদেই তিনি অন্তত ৪৫ দিন বিনাভিসায় ভারতে থাকতে পারেন। সেই মেয়াদও ফুরিয়ে যাওয়ায় প্রশ্ন উঠছে, তাহলে এখন তিনি কোন স্ট্যাটাসে ভারতে অবস্থান করছেন।

শেখ হাসিনা এখন বাংলাদেশ সরকারের কাছে নরমাল পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন। বিশ্লেষকদের মতে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শেখ হাসিনার নরমাল পাসপোর্টের সেই আবেদন যদি মঞ্জুর না করে, তবে ভারত সরকার তাকে ট্রাভেল আইডেনটিটি কার্ড বা ট্রাভেল পারমিট দিতে পারে। সেটা দিয়ে তিনি তৃতীয় কোনো দেশে অনায়াসে সফর করতে পারবেন। আর এর মধ্যে যদি তিনি ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় চান এবং ভারত সরকার তা মঞ্জুর করে, তবে সেটির ভিত্তিতে যত দিন খুশি তিনি ভারতে থাকতে পারবেন।

জানা গেছে, তৃতীয় কোনো দেশে আপাতত শেখ হাসিনার যাওয়ার সুযোগ না হলে ভারতেই অবস্থান করবেন তিনি। এ ব্যাপারে দেশটির রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বিবেচিত হতে যাচ্ছে। ভারতে এর আগেও শেখ হাসিনা ও তার পরিবার রাজনৈতিক আশ্রয়ে ছিলেন।

ভারতের অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, শেখ হাসিনাকে ভারত যদি আশ্রয় দেয়, তবে বাংলাদেশের নতুন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সেটা অন্তরায় হয়ে উঠতে পারে।

ইতোমধ্যে শেখ হাসিনাকে ফেরত আনার বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল গত বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমকে বলেছেন, আমাদের সঙ্গে ভারতের প্রত্যর্পণ চুক্তি রয়েছে। এটি অনুযায়ী ভারতে যদি আমাদের কোনো দোষী মানুষ থাকেন, তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী হোন আর যাই হোন না কেন, তার প্রত্যর্পণ আমরা চাইতে পারি। শেখ হাসিনার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হলে তাকে ফেরত চাওয়া হবে।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনও সাংবাদিকদের বলেছেন, শেখ হাসিনা কোন স্ট্যাটাসে ভারতে রয়েছেন, সেটি আমাদের জানা নেই।

অবশ্য এর আগে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, যদি আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের এ ব্যাপারে নির্দেশনা দেয়, তবে কূটনৈতিকভাবে সেটি দেখা হবে।